পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

এক নজরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির"

নাম – বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ।
ভিশন – “সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরী” ।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য - আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সা) প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী মানুষের সার্বিক জীবনের
পুনর্বিন্যাস সাধন করে আল্লাহর সন্তোষ অর্জন ।
কর্মসুচী – ৫ টি
১) দাওয়াতঃ তরুণ ছাত্রসমাজের কাছে ইসলামের আহ্বান পৌঁছিয়ে তাদের মাঝে ইসলামী জ্ঞান অর্জন এবং বাস্তব জীবনে ইসলামের পূর্ণ অনুশীলনের দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করা ।
২) সংগঠনঃ যে সব ছাত্র ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিতে প্রস্তুত তাদেরকে সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ করা ।
৩) প্রশিক্ষণঃ এই সংগঠনের অধীনে সংঘবদ্ধ ছাত্রদেরকে ইসলামী জ্ঞান প্রদান এবং আদর্শ চরিত্রবানরূপে গড়ে তুলে জাহেলিয়াতের সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মী হিসেবে গড়ার কার্যকরী ব্যবস্থা করা ।
৪) ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন ও ছাত্র সমস্যাঃ আদর্শ নাগরিক তৈরীর উদ্দেশ্যে ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন সাধনের দাবিতে সংগ্রাম এবং ছাত্রসমাজের প্রকৃত সমস্যা সমাধানের সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান ।
৫) ইসলামী সমাজ বিনির্মাণঃ অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং সাংস্কৃতিক গোলামী হতে মানবতার মুক্তির জন্য ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো ।
# প্রতিষ্ঠাকালীন তথ্যঃ
প্রতিষ্ঠাকাল – ৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭৭ ।
প্রতিষ্ঠার স্থান – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ।
প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য – ৬ জন ।
১) মীর কাশেম আলী
২) মুহাম্মদ কামারুজ্জামান
৩) অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের
৪) মুহাম্মদ এনামুল হক মঞ্জু
৫) ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী
৬) বাশারাত হোসেন বকুল
প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি – মীর কাশেম আলী ।
প্রতিষ্ঠাকালীন সেক্রেটারী জেনারেল – ড.এম.এ বারী ।
“বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির” নাম প্রস্তাবক – মরহুম সিদ্দীক জামাল ।
শিবিরের মনোগ্রাম ডিজাইনার – মোহাম্মদ আলী ।
শিবির সঙ্গীত রচয়িতা – ডা. মোর্শেদ আলী । (সদস্য, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, ১৯৭৯)
# শিবিরের যা কিছু প্রথমঃ
প্রথম কেন্দ্রীয় সহসভাপতি – শেখ কামরুল আলম ।
প্রথম শহীদ – শহীদ সাব্বির আহম্মদ । (১১.০৩.১৯৮২, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, সদস্যপ্রার্থী)
প্রথম পঙ্গুত্ববরণকারী – আব্দুল আজীজ । (মহসিন কলেজ, ১৯৭৮ সাল)
প্রথম সদস্য সম্মেলন – ১৯৭৭ সালের ১ অক্টোবর, হোটেল ইয়ামেন ।
প্রথম সাথী সম্মেলন – ১৯৯২ সাল ।
প্রথম কর্মী সম্মেলন – ১৯৮১ সাল ।
প্রথম কর্মপদ্ধতি প্রকাশ – ১৯৭৭ সাল ।
প্রথম সংবিধান প্রণয়ণ – ১৯৭৭ সালের মে মাস ।
প্রথম ছাত্রসংবাদ প্রকাশ – ১৯৭৭ সালের ২৯ অক্টোবর ।
প্রথম কিশোরকন্ঠ প্রকাশ – ১৯৮৪ সাল ।
প্রথম Juvenile Voice প্রকাশ – ২০০১ সাল ।
প্রথম Student Views প্রকাশ – ১৯৭৭ সাল ।
প্রথম ক্যালেন্ডার প্রকাশ – ১৯৮১ সাল ।
প্রথম ডায়েরী প্রকাশ – ১৯৯২ সাল ।
প্রথম ব্যাক্তিগত রিপোর্ট বইয়ের প্রচলন – ১৯৭৭ সাল ।
সদস্য প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ডায়েরী লিখার প্রচলন শুরু হয় – ১৯৮৪ সাল । (প্রস্তাবক – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা)
কেন্দ্রীয় সভাপতি থাকাকালীন প্রথম গ্রেফতার হন – মতিউর রহমান আকন্দ ।
শিবিরের প্রথম ওয়েবসাইট উদ্বোধন হয় – ১৯৯৭ সাল ।
শিবির ছাত্রসংসদ নির্বাচনে প্রথম অংশগ্রহণ করে – ১৯৭৯ সাল ।
কলেজ ছাত্রসংসদে সর্বপ্রথম বিজয়ী হয় – ১৯৮০ সালের ২১ জানুয়ারী, খুলনার আজম খান কমার্স কলেজে ভিপি, জিএস, এজিএস পদসহ ।
কলেজ ছাত্রসংসদে পূর্ণ প্যানেলসহ বিজয়ী হয় – ১৯৮১ সালে, চট্টগ্রাম হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, আজিজ-গাফফার পরিষদের প্যানেল ।
সর্বপ্রথম ও একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদে বিজয়ী হয় – ১৯৮১ সাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (CUCSU)।
# ইসলামী ছাত্রশিবির ঘোষিত দিবস সমূহঃ
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী – ৬ ফেব্রুয়ারী
শহীদ দিবস – ১১ মার্চ
বালাকোট দিবস – ৬ মে
কোরআন দিবস – ১১ মে
পলাশী দিবস – ২৩ জুন
ইসলামী শিক্ষা দিবস – ১৫ আগস্ট
পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস - ২৮ অক্টোবর
বাবরী মসজিদ দিবস – ৬ ডিসেম্বর
বদর দিবস – ১৭ রামাদান
# ইসলামী ছাত্রশিবিরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – www.shibir.org.bd
# এ পর্যন্ত যেসকল রাহবার শিবিরকে নেতৃত্ব দিয়েছেনঃ
১) নামঃ মীর কাসেম আলী
দায়িত্বকালঃ ১৯৭৭
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, অর্থনীতি, ঢাবি
কর্মজীবনঃ শিল্পপতি
বর্তমান দায়িত্বঃ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
২) নামঃ মুহম্মদ কামারুজ্জামান
দায়িত্বকালঃ ১৯৭৭-৭৮, ৭৮-৭৯
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, গণযোগাযোগ বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ সাংবাদিকতা
সম্পাদক- সাপ্তাহিক সোনার বাংলা
বর্তমান দায়িত্বঃ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৩) নামঃ অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তাহের
দায়িত্বকালঃ ১৯৭৯-৮০, ১৯৮০-৮১
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ শিক্ষাকতা
বর্তমান দায়িত্বঃ সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৪) নামঃ মুহাম্মদ এনামুল হক মনজু
দায়িত্বকালঃ ১৯৮১-৮২ (আংশিক)
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, ইংরেজী বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ শিক্ষকতা
৫) নামঃ মুহাম্মদ সাইফুল আলম খান মিলন
দায়িত্বকালঃ ১৯৮২-৮৩
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, সমাজকল্যাণ বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ এম.ডি. ইবনে সিনা হাসপাতাল
বর্তমান দায়িত্বঃ কেন্দ্রীয় শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৬) নামঃ মুহাম্মদ তাসনীম আলম
দায়িত্বকালঃ ১৯৮৩-৮৪, ১৯৮৪-৮৫
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এম এস এস, সমাজকল্যাণ বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ অধ্যাপনা
বর্তমান দায়িত্বঃ কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৭) নামঃ ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
দায়িত্বকালঃ ১৯৮৫-৮৬, ১৯৮৬-৮৭
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এমবিবিএস (ডিএমসি), ঢাবি
কর্মজীবনঃ এমডি. আল-মানার হসপিটাল প্রা.লি:
বর্তমান দায়িত্বঃ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৮) নামঃ মুহাম্মদ শামছুল ইসলাম
দায়িত্বকালঃ ১৯৮৭-৮৮, ১৯৮৮-৮৯
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, সমাজতত্ব বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ ব্যবসা
বর্তমান দায়িত্বঃ আমীর, চট্টগ্রাম মহানগরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৯) নামঃ ডা: আমিনুল ইসলাম মুকুল
দায়িত্বকালঃ ১৯৮৯-৯০, ১৯৯০-৯১
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এফ সি পি এস
কর্মজীবনঃ চিকিৎসক
১০) নামঃ আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ
দায়িত্বকালঃ ১৯৯১-৯২
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, খাদ্য পরিপুষ্টি বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ পরিচালক, স্টুডেন্ট এফেয়ার্স ডিভিশন, আই.আই.ইউ.সি
বর্তমান দায়িত্বঃ সহকারী সেক্রেটারি, চট্রগ্রাম মহানগরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১১) নামঃ ব্যারিস্টার মুহাম্মদ হামিদ হোসাইন আজাদ
দায়িত্বকালঃ ১৯৯৩
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, হিসাববিজ্ঞান, চবি, বার এট ল, লন্ডন
কর্মজীবনঃ আইনজীবি, প্রবাসি
১২) নামঃ মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খান
দায়িত্বকালঃ ১৯৯৪-১৯৯৫
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, ইসলামিক স্টাডিজ, রাবি
বর্তমান দায়িত্বঃ আমীর, ঢাকা মহানগরী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী
১৩) নামঃ মুহাম্মদ শাহ্জাহান
দায়িত্বকালঃ ১৯৯৬-১৯৯৭
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, খাদ্য পরিপুষ্টি বিভাগ, ঢাবি
কর্মজীবনঃ প্রশাসনিক কর্মকর্তা
ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতাল
বর্তমান দায়িত্বঃ আমীর,কক্সবাজার জেলা, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১৪) নামঃ মুহাম্মদ মতিউর রহমান আকন্দ
দায়িত্বকালঃ ১৯৯৮, ১৯৯৯
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, এম এস সি অর্থনীতি, ঢাবি
কর্মজীবনঃ এমডি, ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতাল
বর্তমান দায়িত্বঃ সহকারী প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১৫) নামঃ এহসানুল মাহবুব জোবায়ের
দায়িত্বকালঃ ২০০০
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ঢাবি
কর্মজীবনঃ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী
বর্তমান দায়িত্বঃ আমীর, সিলেট মহানগরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১৬) নামঃ নুরুল ইসলাম বুলবুল
দায়িত্বকালঃ ২০০১-২০০২
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, রাবি
কর্মজীবনঃ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী
বর্তমান দায়িত্বঃ সেক্রেটারি, ঢাকা মহানগরী, কেন্দ্রীয় শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১৭) নামঃ মজিবুর রহমান মনজু
দায়িত্বকালঃ ২০০৩
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এমফিল গবেষক, (মুসলিম উম্মাহ ও জাতীয়তাবাদ) চবি
কর্মজীবনঃ ডি.ই.ডি (ডিটিভি)
বর্তমান দায়িত্বঃ সহসভাপতি, বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্র
১৮) নামঃ মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন
দায়িত্বকালঃ ২০০৪-২০০৫
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ঢাবি
কর্মজীবনঃ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী
বর্তমান দায়িত্বঃ ঢাকা মহানগরী সহকারী সেক্রেটারী ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
১৯) নামঃ ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম মাসুদ
দায়িত্বকালঃ ২০০৬-২০০৭
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ পি.এইচ.ডি (বাংলা সাহিত্য)
কর্মজীবনঃ প্রকল্প পরিচালক, বাংলাদেশ পাবলিকেশন্স লিঃ
বর্তমান দায়িত্বঃ সহকারী সেক্রেটারী, ঢাকা মহানগরী ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
২০) নামঃ মুহাম্মদ জাহিদুর রহমান
দায়িত্বকালঃ ২০০৮
কর্মজীবনঃ ডিরেক্টর, নর্দান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
২১) নামঃ ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম
দায়িত্বকালঃ ২০০৯-২০১০
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, ইসলামিক স্টাডিজ, রাবি, পি.এইচ.ডি (ইসলামিক স্টাডিজ)
বর্তমান দায়িত্বঃ আমীর, রমনা থানা, ঢাকা মহানগরী ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
২২) নামঃ ডা. মুহাম্মদ ফকরুদ্দিন মানিক
দায়িত্বকালঃ ২০১১
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ বি এইচ এম এস (BHMS)
কর্মজীবনঃ চিকিৎসক
২৩) নামঃ দেলাওয়ার হোসেন
দায়িত্বকালঃ ২০১২-২০১৩
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স, রসায়ন, রাবি
২৪) নামঃ মুহাম্মদ আবদুল জাব্বার
দায়িত্বকালঃ ২০১৪ - চলমান
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাস্টার্স ।
# শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতিঃ
১) শেখ কামরুল আলম
২) হামিদুর রহমান আজাদ
# শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেলবৃন্দ (যারা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেননি) -
১) ড. মুহাম্মদ আব্দুল বারী
২) আবুল হাসানাত মুহাম্মদ আব্দুল হালিম
৩) মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া
৪) আ.স.ম মামুন শাহীন
৫) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম
৬) শিশির মুহাম্মদ মুনীর
৭) ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী
# ইসলামী ছাত্রশিবিরের মোট শহীদঃ (০৬.০২.১৯৭৭ – ০৫.০২.১৯৭৭)
মোট সংখ্যা - ২১৭ জন
সদস্য - ৩১ জন
সদস্য প্রার্থী - ৯ জন
সাথী - ৭৫ জন
সাথী প্রার্থী - ৭ জন
কর্মী - ৮৮ জন
সমর্থক - ৭ জন
# যাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন ২১৭ জন ভাইঃ
আওয়ামীলীগ/ ছাত্রলীগ – ৬৬ জন
ছাত্রদল – ৩০ জন
ছাত্র সমাজ – ৫ জন
বাম সংগঠন (ছাত্রমৈত্রী/ ছাত্র ইউনিয়ন/ কমিউনিস্ট পার্টি) – ৯ জন
জাসদ ছাত্রলীগ – ২ জন
ছাত্র ঐক্য (ছাত্রদল + ছাত্রলীগ + বাম সংগঠন) – ৬ জন
১৪ দল – ৩ জন
ঘাদানিক – ২ জন
প্রশাসন (পুলিশ/ র‍্যাব/ বিজিবি/ যৌথবাহিনী) – ৫৩ জন
প্রশাসন+আওয়ামীলীগ/ছাত্রলীগ – ২৩ জন
অন্যান্য – ১৮ জন
( বিঃদ্রঃ এই নোটে কোনো তথ্য সংযোজন বা বিয়োজন বা সংশোধন (যদি নিশ্চিত হোন) করার প্রয়োজন হলে তা কমেন্টে উল্লেখ করার জন্য আপনাদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি । আর এটি শেয়ার করে অন্যান্য ভাইদেরকে শিবির সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিতে আপনাদের কাছ থেকে সহযোগীতা কামনা করছি । )

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

আজ ২৭শে সেপ্টম্বর গুগল এর ১৭তম জন্মবার্ষিকি।

গুগল ১৭তম জন্মদিন উদযাপন একটি স্মারকের সঙ্গে ডুডল হার্কিং এ ফিরে ১৯৯০ এর ওয়েব এ।

ইমেজ, একটি বিপরীতমুখী, প্লাস্টিক পিসি, লাভা ল্যাম্প  এবং এমনকি ১৯৯৮  "গুগল!" লোগো ! সেপ্টেম্বর ২৭ গুগলের হোমপেজে, অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ও এর ইন্টারনেট জায়ান্ট ক্রিয়াকলাপ  সমন্বিত অনুসারে ১৯৯৮ তার জন্মদিন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

তবে,  ২০০৬ সাল পযর্ন্ত সেপ্টেম্বর ২৭ তারিখ তার কোন জন্মদিন পালন করেনি, কিন্তু এই বছর এটি ছিল  সেপ্টেম্বর ২৬ তারিখ হিসাবে।

আজ রাত ৯টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত সুপার মুনের দেখা মিলবে।

২৭ সেপ্টেম্বর আশ্বিনী পূর্ণিমা।একইসাথে আজ সুপারমুন। গোধূলির সময়টা কেটে গেলেই আকাশে দেখা মিলবে ব্লাডমুন কিংবা রক্তিম চাঁদের।  পৃথিবীতে ৩০ বছর পর বিরল এই ঘটনা ঘটতে চলেছে। মর্ত্যের মানুষের কাছে কল্পলোকের চাঁদ আরো স্পষ্ট হয়ে ধরা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে চাঁদ নিজেই! আজ দেখা মিলবে সুপার মুন বা অতিকায় চাঁদের। এর রং হবে রক্তলাল। চাঁদ যখন তার স্বাভাবিক অক্ষ থেকে কিছুটা সরে এসে পৃথিবীর কাছাকাছি অবস্থান করে তখন আকাশে ‍সুপারমুন দেখা যায়। এ সময় চাঁদ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উজ্জ্বল ও বড় দেখায়। তবে চাঁদের এ আকার খুব স্বল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সময় সন্ধ্যা ৭টা ৪১ থেকে রাত ৯টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হবে।  উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, আটলান্টিক মহাসাগর, গ্রিনল্যান্ড, ইউরোপ, আফ্রিকা, ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই উত্তেজনাকর মুহূর্ত অবলোকন করা যাবে। পৃথিবীর সব জায়গা থেকে এই ঘটনা দেখা যাবে না। বাংলাদেশসহ এশিয়ার দর্শকরা চাঁদের এ দুর্লভ দৃশ্য দেখতে বঞ্চিত হবেন। এসময় পূর্ণ চন্দ্র গ্রহণ ঢেকে দেবে চাঁদের আকাশকে। প্রাকৃতিক বিস্ময়কর ও বিরল ৭২ মিনিটের এই ঘটনা উপভোগ করতে যারা ব্যর্থ হবেন, তাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।এই  অনন্য ঘটনা ২০৩৩ সালে ফের ঘটবে। এর আগে এরকম দৈত্যাকায় রক্তিম পূর্ণ-চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৮২ সালে। গত একশো বছরে এই সুযোগ পাওয়া গিয়েছিলো মাত্র পাঁচ বার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান নাসার ওয়বসাইটে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত খবর প্রকাশ করেছে। এই বিরল ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে নাসার পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে । ঘটনাটি নাসা টিভি লাইভ-ফিড সম্প্রচার করবে। প্রতি মাসেই চাঁদ তাঁর উপবৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে করতে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে। কিন্ত, পূর্ণ-চাঁদ হয়ে পৃথিবীর কাছে আসা নি:সন্দেহে বিরল  ঘটনা। এই দিনে চাঁদ তাঁর প্রকৃত পরিধি অপেক্ষা ১৪ শতাংশ বড় হয়ে আমাদের কাছে দেখা দেবে।

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

সৌদি আরবের মিনাতে কেন বার বার দুর্ঘটনা?

সৌদি আরবের মক্কা থেকে তিন মাইল দুরে মিনাতে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ হাজিরা হজ্জের সময় শয়তানের উদ্দেশ্যে প্রতীকী রীতি অনুযায়ী পাথর ছুড়তে যান। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় এই স্থানটিতেই সবচেয়ে বেশি হাজিদের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালেও জামারাতে ২০৩ ও ২২৩ নম্বর সড়কের মোড়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর পরেই প্রশ্ন উঠছে কেন বার বার এক জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটছে। হজ্জের রীতির মধ্যে এই একটি সময় নির্দিষ্ট স্থানে হাজিদের পাথর নিক্ষেপ করতে হয়। প্রায় পাঁচতলা উঁচু এই জায়গায় উঠে পাথর নিক্ষেপ করে আবার হেটে ঐ স্থান ত্যাগ করতে হয়। সৌদি আরবের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ২০৩ ও ২২৩ নম্বর সড়কের সংযোগ স্থলে মানুষের চাপ বেড়ে গেলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে এর আগেও ২০০৬ সালে মিনায় পাথর ছোড়ার সময় ৩৬৪ জন নিহত হন। যেহেতু সব হাজিদের এখানে আসতে হয় সেজন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ অবকাঠামো উন্নতি করেছে।

বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৫

শহীদ আবদুল মালেক প্রেরনার এক সুউজ্জ্বল বাতিঘর...


আগামী ১৫ই আগষ্ট আন্দোলনের অগ্রসেনানী আব্দুল মালেক ভাইয়ের ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী। শহীদ আব্দুল মালেক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের সেরা ছাত্র । ইসলামী শিক্ষার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ও
সমাজতন্ত্রীদের হাতে গুরুতর আহত হওয়ার ৩ দিন পর ১৯৬৯ সালের ১৫ আগষ্ট তিনি শহীদী মৃত্যুর অমিয়সুধা পান করেন। পাকিস্তান আমলে সর্বশেষ শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয় ১৯৬৯ সালে । এতে শিক্ষা ব্যবস্থার আদর্শিক ভিত্তি কি হবে, তা নিয়ে জনমত জরিপের আয়োজন করা হয় । এর অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৬৯ সালের ১২ আগষ্ট টি.এস.সি. তে আয়োজন করা হয় একটি আলোচনা সভার । এই আলোচনা সভায় বামপন্থীদের বিরোধীতামুলক বক্তব্যের মধ্যে শহীদ আব্দুল মালেক মাত্র ৫ মিনিট বক্তব্য রাখার সুযোগ পান । অসাধারন মেধাবী বাগ্মী আব্দুল মালেকের সেই ৫ মিনিটের যৌক্তিক বক্তব্যে সভার মোটিভ পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে যায় । উপস্থিত শ্রোতারা আব্দুল মালেকের বক্তব্যের সাথে ঐক্যমত্য পোষণ করে । আব্দুল মালেকের ত্বত্ত্ব ও যুক্তিপূর্ণ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ক্ষিপ্ত করে দেয় ইতোপূর্বে বক্তব্য রাখা ইসলাম বিরোধী বক্তাদের । এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যুক্তি ও বান্তবতার লড়াইয়ে পরাজিত বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ গোষ্ঠী ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমন চালায় ছাত্রদের ওপর । সকল সংগীকে নিরাপদে বিদায় দিয়ে শহীদ আব্দুল মালেক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশ দিয়ে যাবার পথে লোহার রড-হকিষ্টিক নিয়ে তার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে পিশাচ বাহিনী ধর্মনিরপেক্ষ ও বাম সন্ত্রাসীরা । রক্তাক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ছাত্র আব্দুল মালেক । তিনদিন পর ১৫ আগষ্টে শাহাদাত বরন করেন ইসলামের এই মহান বক্তা । আব্দুল মালেকের জন্ম ১৯৪৭ সালের মে মাসে। জন্ম স্খান বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার খোকসাবাড়ী গ্রামে। অসাধারণ মেধাবী আব্দুল মালেকের আলোকোজ্জল শিক্ষাজীবন ছিলো এরকম, -তিনি জুনিয়র স্কলারশীপ লাভ করেন। -এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে মেধা তালিকায় একাদশ স্খান অর্জন করেন।-এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪র্থ স্খান নিয়ে পাস করেন। -এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন। -শাহাদাত বরণ কালে তিনি ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। -তিনি ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ১২২ নং রুমে থাকতেন।
শহীদ আব্দুল মালেকের মধ্যে বিস্ময়করভাবে অনুকরণীয় সব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল। তিনি ছিলেন প্রখর মেধাবী, নিরহংকার, বিনয়ী, মিষ্টভাষী, সঠিক নেতৃত্ব দানের দূর্লভ যোগ্যতার অধিকারী, ভালোবাসা, ত্যাগ ও কুরবানীর উজ্জ্বল ও অনুপম দৃষ্টান্ত। ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থারপক্ষে কথা বলতে গিয়ে প্রথম শহীদ , শহীদ আব্দুল মালেক ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মীর মনে চিরদিন ভাস্বর হয়ে থাকবেন প্রেরনার এক সুউজ্জ্বল বাতিঘর হয়ে ।

শুক্রবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৫

বাবা’কে বিষণ মনে পড়ে! ৩১ডিসেম্বর ২০১৩ইং

১ম মৃত্যু বার্ষিকী
বুঝিনি কবু বাবা এভাবে বিজয় মাসে বিদায় ঘন্টা বাজাবে। যখন বাবা পাশে ছিল এক মূহুর্তেও মনে করিনি বাবা হারিয়ে যাবে। বাবার মৃত্যুর আমন্ত্রণ এতো ঘনিয়ে জানলে তৃপ্তিভরে ‘বাবা’ ডেকে নিতাম। একটানা এক বছর চার মাস আরোগ্যে কোন ডাক্তার কবিরাজ সনাক্তা করতে না পারায় বিভিন্ন ঔষুধ সেবনে ছিলেন ব্যাস্ত আমার বাবা। শারিরীক এতো অসুস্থতার পরও চিন্তা-চেতনা, দেহ-বল ছিল সতেজ। তাঁর চলাফেরা ছিল স্বাভাবিকের ন্যায়। রাতে ব্যাথা যন্ত্রণা বাড়লেও দিনে রীতিমত চালিয়ে যায় তাঁর প্রয়োজনীয় কাজ-কাম। বোঝা যেতনা তিনি একজন অসুস্থ। কোন কাজে খাম-খেয়ালী ছিল না তাঁর। এতো পরিশ্রমী, ধার্মিক, সৎ, সত্যবাদীর পরিচয় দিয়ে গেল আমাদের কাছে। যেমন ছিল গরম মেজাজী তেমন ছিল সাধু, দয়ালু, হৃদয়বান সাদা-মাটা। মিষ্টি কথায় কারো মন ভোলার চেয়ে তিক্ত কথায় স্পষ্টবাদী তাঁর স্বভাব। সুতরাং যার দরুণ লোকের কাছে তেমন প্রিয় হয়ে উঠেনি। কোন বদঅভ্যাস, অপব্যায়ে মগ্ন ছিল না। তাঁর অসাধ্য চেষ্টায় আমাদের এত বড় সংসারে অভাবের ছোঁয়া লাগেনি। সংসারে ৬ভাই ৩বোন কে গড়েছে মানুষ করে। বাবা হয়ে ঋণী থাকেনি সন্তানের কাছে। ‘মা’ আর ‘বাবা’ ডেকে তৃষ্ণা মিটেনী। মনে করেছিলাম মা’ই শুধু পাষান বাবার হাতে তুলে দিয়ে আমাদের অসহায় রেখে বিদায় দিল। কিন্তু দেখি বাবা, মায়ের চেয়ে কম পাষাণ নয়। সে ও কিভাবে একাকী ফেলে চলে গেল আমাদের নিঃস্ব করে। ডিসেম্বর নজিরবিহীন বাংলার বিজয় এবং স্বাধীনতার মাস হিসেবে বাঙ্গালীর মনে আবেগাপ্লুত স্মৃতির শোক বয়ে যায় যুগ যুগ ধরে। সেই ডিসেম্বরের মধ্য দিয়ে ঝরে যায় বিভিন্ন স্মৃতি বিজড়িত একটি পূর্ণাংগ বছর আর সূচনা হয় সজ্জিত নতুন বছর। বাবাও কি সে অবিকলে সমাপ্তি ঘটাল বিজয় মাস এবং অতিবাহিত একটি সম্পূর্ণ বছর আর নতুন বছরের আগমনে! নয় মান যুদ্ধে ত্রিশ হাজার মা-বোনের ইজ্জত আর রক্তের বিনিময়ে এই ডিসেম্বর বিজয় মাসের উড্ডয়ন, লাল বৃত্তিকায় সবুজ পতাকা উদয়নে ব্যাথা-বেদনাহত মুক্তমনায় হাসি উৎফুল্ল সারা বাংলা ডিসেম্বরের আগমনে । বিজয়ের মাস ডিসেম্বর ছিনিয়ে আনতে যেমন ছিল কষ্টের ফল তেমনি বিদায় বেলা আরও বেদনাদয়ক। সে ডিসেম্বর বিদায়বেলা কেড়ে নিয় যাই আমার প্রাণপ্রিয় ‘বাবা’কে। ৩১ তারিখ রাত ১২টা পার হয়ে ১তারিখে যখন পা দেয় বাবার বিদায় ঘন্টা বাজে। ভোর না হতে বাবা পরিবারের সবার (প্রত্যেক সন্তানের) কাছে দায়িত্ব তুলে দিয়ে সুস্থভাবে বিদায় নেয়। সবাই কান্নায় কলরোলে পাগলপারা। এই কি বাস্তব বিশ্বাসের অযোগ্য অশ্রুজলে সিক্ত প্রত্যেকে। বিজয়মালায়  ডিসেম্বর বাঙ্গালীর মনে যেমন গৌরব জন্মালো তেমনি আর একটি ইতিহাসের সূচনা ঘটালো বাবা’র নিশির রাতে চিরনিদ্রায়। এই দিনটিতে অশ্রুজলে সিক্ত, বেদনায় মক্ত ছাড়া আর কিছু দেবার নাই বাবা তোমাকে। 

শিকের ওপারে বাবাকে শুধু দেখেছি...কোলে উঠতে পারিনি -

আমি নুমায়ির। নামিরার ভাই। আমার বয়স সাত দিন। নুমায়ির আমার ডাকনাম। বাবা আমার নাম না রাখতে পারলেও অনলাইনেই আমার একটি নাম দেয়া হয়েছে- আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ। প্রখ্যাত সাহাবীর নামেই আমার এ নাম। মাসুদ আমার বাবা। আমি উনাকে দেখেছিলাম না। আজ দেখেছি। সাধারণত ছেলে সন্তান জন্মের পরে সন্তানের কানের পাশে নাকি আযান দেয়া হয়। সচরাচর পিতাই আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে আযান দিয়ে থাকেন। আমার বাবাও সেরকমই স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু পারেননি। কারন উনি বাসায় ছিলেন না।
এক দিন দুই দিন করে করে ছয়টি দিন পার হয়ে গেল। কিন্তু বাবা আসছিলেন না। অনেকেই বাসায় আসলেন। আমাকে কোলে নিলেন। আমাকে সবাই কেন যেন একটু বেশী করে আদর করছেন। কিন্তু জানেন, আমার সব আদরের পরেও কেন যেন একটি অতৃপ্তি কাজ করছিল। কি সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমি ছোট তো, তাই কাউকে জিজ্ঞাসাও করতে পারছিলাম না।
সবাই আমার ছবি তুললেন। আদর করে ফেসবুকেও আমার ছবি পোস্ট করলেন চাচ্চুরা, খালামনিরা। যারা আমাদের বাসায় আসতে পারেননি, তারাও আমাকে দেখলেন। কমেন্টে অনেকেই অনেক দোয়া করেছেন। অনেকে নাকি আমাকে দেখে চোখের পানিও ফেলেছেন। আল্লাহর কাছে আমার জন্য অনেক দোয়া করেছেন।
আজ এক সপ্তাহ পরে মামনি আমাকে নিয়ে বাইরে গেলেন। ঘিঞ্জি রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে এক সময় একটি বড় দালানের কাছে পৌঁছলাম আমরা। কী জানি কোথায় যাচ্ছি আমরা! তবে এক ধরনের অজানা ভাল লাগা আমার মধ্যে কাজ করছিল। আমিতো আসলে জানিনা, আমরা কোথায় যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত আমরা ভেতরে গেলাম। কিছুক্ষন পরে লোহার শিকের ওপাশ থেকে একজন আমাকে ডাকলেন। আমি আধো আধো চোখ খুলে তাকালাম। খুব নজর করে খেয়াল করলাম। প্রথম দেখাতেই খুব ভাল লাগল। এক ধরনের অনুভূতি খেলা করে গেল ভেতরে। খেয়াল করলাম- উনার চোখের পানি বের হতে চাচ্ছে। কিন্তু উনি দৃঢ়তার সাথে তা আটকে রাখতে চাইছেন। মা আমাকে উচু করে ধরলেন। বললেন- দেখ, বাবাকে। আমার মনে পড়ে গেল এ কোলের জন্যই তো আমার অপেক্ষা ছিল। ইনিই আমার বাবা! বাবা, আমিতো তোমার জন্যেই অপেক্ষা করছি ক’দিন ধরে। আমি ভাবলাম, এবার বাবা আমাকে কোলে নেবেন। অতৃপ্তি বোধ হয় কিছুটা মিটবে। আমি অপেক্ষা করলাম। কিন্তু জানেন, বাবা আমাকে কোলে নিলেন না। কিভাবে নেবেন, কালো শিকের কারনে বোধ হয় আসতে পারছেন না। বলতে চাইলাম, বাবা শিকের এপাশে আসো। আমিতো তোমার জন্য হাত বাড়িয়ে আছি...
বাবা এবার আর পারলেন না। শব্দ করে ডুকরে কেঁদে ফেললেন। মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি, উনার চোখেও পানি।। আর বোন নামিরার দিকে খেয়াল করলাম। না, ও কিছু বুঝছেনা। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। একবার বাবার দিকে, একবার মায়ের দিকে আরেকবার আমার দিকে তাকাচ্ছে। কালো শিকগুলো ধরে ও শুধু ঝাকাচ্ছে। ওর বয়সও তো বেশী না। তাই শিকগুলো ও ভাংতে পারছেনা। আমি আরেকটু বড় হলে এ শিক ভেঙ্গে বাবার কাছে যেতাম। আমি বাবার চোখের পানি মুছে দিতে চাইলাম। কিন্তু আমার হাত তো ছোট। শিক পার হবেনা। তাই, বাবাই পরক্ষনে চোখ মুছে আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন... বাবার হাসিটা না খুব মিষ্টি!
বাবা হাত বাড়ালেন। আমার মাথায় হাত বুলালেন। কী পরম তৃপ্তি বাবার হাতের স্পর্শে...। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে কিছু কথা বললেন। সে কথাগুলো বোধ হয় বাবার এতোদিনের সংরক্ষিত অনুভূতির ফসল। উনি বললেন- "দেখে রাখ জালিমের জেলখানা, আসতে হতে পারে তোমারও, এই আন্দোলনের ডাকে সারা দিয়ে"। আমি বলতে চাইলাম- বাবা, তুমি শুধু দোয়া কর। তোমার এ আন্দোলনের পথে যেন আমিও যথাযথভাবে পা বাড়াতে পাড়ি। আমার নামের স্বার্থকতা যেন আমি রাখতে পারি। তোমার মত সাহসী যেন হতে পারি, বাবা।
চলে এলাম বাবার আদেশ মিশ্রিত নির্দেশনাকে বুকে ধারন করে।
সবার কাছে দোয়া চাইছি। আমি যেন ধৈর্য ধারন করতে পারি। আর বাবা যেন খুব দ্রুত আমার কাছে চলে আসতে পারেন।

(নুমায়িরের অনুভূতি হয়তবা এমনই হবে। মাসুদ ভাইয়ের সাথে জেলখানায় তাঁর সন্তানের সাক্ষাতের ছবিটি দেখে খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। কল্পনা করতে চেষ্টা করলাম সদ্যজাত এ নুমায়িরের অনুভূতির ব্যাপারে। সে কল্পনাকেই লিখতে চেষ্টা করেছি মাত্র-